। নিঝুম দ্বীপের আদ্যোপান্তঃ ভ্রমণ গাইড ।

নিঝুম দ্বীপের আদ্যোপান্তঃ ভ্রমণ পরিকল্পনা, যাতায়াত, থাকার কটেজ, খাবার হোটেল ও দর্শনীয় স্থানসমূহ

নিঝুম দ্বীপকে ‘ইছামতির চর’ এবং ‘বাল্লারচর’ বলেও ডাকা হতো। এ দ্বীপে সর্বপ্রথম বসবাস শুরু করেন ‘ওসমান’ নামের একজন বাথানিয়া এবং তখন থেকেই এর নাম ছিলো ‘চর-ওসমান’। ধারণা করা হয় ১৯৫৭ সালের দিকে বেশকিছু সংখ্যক বাথানিয়া এ অঞ্চলে বসবাস শুরু করে, তবে ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকারী ‘ভোলা ঘূর্ণিঝড়ের’ পর থেকে এখানে বসবাস অধিকহারে বেড়ে যেতে থাকে। ৪ জোড়া চিত্রা হরিণ বনবিভাগ ১৯৭৮ সালে এ দ্বীপের জঙ্গলে ছাড়ে এবং ১৯৯৬ সালের হরিণশুমারি অনুযায়ী হরিণের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২২ হাজারে। প্রশাসনিকসূত্রে ১৯৭৯ সালে এ দ্বীপের নাম ‘নিঝুম দ্বীপ’ রাখা হয় এবং প্রায় ২ কোটি ৪৩ লক্ষ বৃক্ষরোপন করা হয়। শীতের শুরুতে অগণিত অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয় এ দ্বীপ এবং সারা বছর প্রায় ৩৫ রকমের পাখ-পাখালির মেলা চোখে পরে। এ দ্বীপ ‘চেঁউয়া’ মাছের শুটকি প্রস্তুতে জনপ্রিয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ৮ ই’ এপ্রিল, ২০০১ সালে নিঝুম দ্বীপকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

কখন যাবেন

বর্ষা ঋতু ও ঝড়ের সময় ব্যতীত বছরের যে কোন সময়েই নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণ করতে পারেন।

নিঝুম দ্বীপ যাওয়ার উপায়

বেশ কয়েক ভাবে নিঝুম দ্বীপে যাওয়া যায়।

  • ঢাকা থেকে বাসে/ট্রেনে নোয়াখালী হয়ে নিঝুম দ্বীপ।
  • ঢাকা থেকে লঞ্চে সদরঘাট থেকে হাতিয়া তমুরুদ্দীন ঘাট হয়ে নিঝুম দ্বীপ।
  • চট্টগ্রাম লঞ্চ সদরঘাট থেকে হাতিয়ার নলচিরা ঘাট হয়ে নিঝুম দ্বীপ।

ঢাকা থেকে নিঝুম দ্বীপ যাওয়া যায় সড়ক, রেল ও নদীপথে। তবে সবথেকে সহজ হলো নদী পথে ঢাকার সদরঘাট থেকে হাতিয়ার তমুরুদ্দীন ঘাট হয়ে নিঝুম দ্বীপে যাওয়া।

নৌ পথেঃ

  • লঞ্চে ঢাকার সদরঘাট থেকে হাতিয়ার তমরুদ্দীন ঘাট;
  • মোটরবাইকে হাতিয়ার তমরুদ্দীন ঘাট থেকে হাতিয়ার মোক্তারিয়া ঘাট;
  • ট্রলারে মোক্তারিয়া ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাট;
  • মোটরবাইকে বন্দরটিলা ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার।
। ঢাকা থেকে ‘এম ভি ফারহান ৩’ অথবা ‘এম ভি ফারহান ৪’ লঞ্চ হাতিয়ার তমরুদ্দীন ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ।
। ঢাকা থেকে ‘এম ভি ফারহান ৩’ অথবা ‘এম ভি ফারহান ৪’ লঞ্চ হাতিয়ার তমরুদ্দীন ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ।
জেনে রাখা প্রয়োজনঃ
  • ঢাকা থেকে ‘এম ভি ফারহান ৩’ অথবা ‘এম ভি ফারহান ৪’ লঞ্চ মনপুরা হয়ে হাতিয়ার তমরুদ্দীন ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় প্রতিদিন বিকাল ৫ঃ৩০ মিনিটে। হাতিয়ার তমরুদ্দীন ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়ে দুপুর ১২ঃ৩০ মিনিটে এবং পৌঁছায় পরদিন সকাল ৬ঃ০০ মিনিটে (ভাড়াঃ ২৫০-১৮০০ টাকা)।
  • মোটরবাইকে হাতিয়ার তমরুদ্দীন ঘাট থেকে হাতিয়ার মোক্তারিয়া ঘাটে পৌছুতে সময় লাগবে ৫০ মিনিট (ভাড়াঃ ২ জন ৩০০ টাকা।
  • মোক্তারিয়া ঘাট থেকে ৩০ মিনিট অন্তত ট্রলার যায় নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাটে। সময় লাগবেঃ ১৫ মিনিট (ভাড়াঃ ২০ টাকা)।
  • মোটরবাইক/ব্যাটারি চালিত অটোতে যাওয়া যায় বন্দরটিলা ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার। এখানেই সকল থাকার কটেজ ও খাবার হোটেলের অবস্থান। সময় লাগবেঃ ২০ মিনিট (বাইকে ভাড়াঃ ২ জন ১০০ টাকা)।
  • ঢাকা থেকে ‘এম ভি তাসরিফ ১’ অথবা ‘এম ভি তাসরিফ ২’ লঞ্চ ছেড়ে যায় সন্ধ্যা ৬ঃ০০ মিনিটে। হাতিয়ার তমরুদ্দীন ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়ে দুপুর ১ঃ০০ মিনিটে এবং পৌঁছায় পরদিন সকাল ৬ঃ০০ মিনিটে।
যোগাযোগঃ
  • এম ভি ফারহান ৩ঃ ০১৭৮৫ ৬৩০ ৩৬৬
  • এম ভি ফারহান ৪ঃ ০১৭৮৫ ৬৩০ ৩৬৮, ০১৭৮৫ ৬৩০ ৩৬৯, ০১৭৮৫ ৬৩০ ৩৭০
  • এম ভি তাসরিফ ১ঃ ০১৩১২ ৪৭৬ ৮২২
  • এম ভি তাসরিফ ২ঃ ০১৩১২ ৪৭৬ ৮২৪
ভাড়াঃ
    • ডেক শ্রেনীঃ ২৫০ টাকা ।
    • সিংগেল কেবিনঃ ১০০০ টাকা।
    • ডাবল কেবিনঃ ১৮০০ টাকা ।

সড়ক পথেঃ 

  • বাসে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর সোনাপুর;
  • সিএনজিতে সোনাপুর থেকে চেয়ারম্যান ঘাট;
  • সি-ট্রাক/ট্রলার/স্পীড বোট চেয়ারম্যান ঘাট থেকে হাতিয়ার নলচিরা ঘাট;
  • মোটরবাইকে হাতিয়ার নলচিরা ঘাট থেকে হাতিয়ার মোক্তারিয়া ঘাট;
  • ট্রলারে মোক্তারিয়া ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাট;
  • মোটরবাইকে বন্দরটিলা ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার।
। ঢাকা থেকে 'হিমাচল, লাল সবুজ, একুশে বাস' ছাড়ে নোয়াখালীর সোনাপুরের উদ্দেশ্যে ।
। ঢাকা থেকে ‘হিমাচল, লাল সবুজ, একুশে বাস’ ছাড়ে নোয়াখালীর সোনাপুরের উদ্দেশ্যে । ছবিঃ সংগৃহীত ।
জেনে রাখা প্রয়োজনঃ
  • ঢাকার সায়েদাবাদ/ টিটিপাড়া (হিমাচল, লাল সবুজ) /মানিকনগর (একুশে) থেকে ‘হিমাচল’ কিংবা ‘একুশে’ বাস ছাড়ে নোয়াখালীর সোনাপুরের উদ্দেশ্যে। সময় লাগবেঃ ৫ ঘন্টা (ভাড়াঃ নন-এসি-৩৫০ টাকা, এসি-৪০০ টাকা)।
  • সিএনজিতে সোনাপুর থেকে চেয়ারম্যান ঘাট পৌছুতে সময় লাগবে দেড় ঘন্টা (ভাড়াঃ জন প্রতি ৯০ টাকা)।
  • চেয়ারম্যান ঘাট থেকে সারাদিনে কেবল ১টি সি-ট্রাক ছেড়ে যায় সকাল ৭-৮ টায় (জোয়ারের উপর নির্ভরশীল) নলচিরা ঘাটের উদ্দেশ্যে। তবে ট্রলার কিংবা স্পিড বোট চলাচল করে নিয়মিত,২ ঘন্টা অন্তর,বিকেল ৫ টা পর্যন্ত। সি-ট্রাকে সময় লাগবেঃ ২ ঘন্টা (ভাড়াঃ ৯০ টাকা), ট্রলারে সময় লাগবেঃ ২ ঘন্টা (ভাড়াঃ ১২০-১৫০ টাকা), স্পিড বোটে সময় লাগবেঃ ২০ মিনিট (ভাড়াঃ ৪০০ টাকা)।
  • নলচিরা ঘাট থেকে রিজার্ভ মোটরবাইকে হাতিয়ার মোক্তারিয়া ঘাট। সময় লাগবেঃ ১ ঘন্টা (ভাড়াঃ ২ জন ৩৫০-৪০০ টাকা)।
  • মোক্তারিয়া ঘাট থেকে ৩০ মিনিট অন্তত ট্রলার যায় নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাটে। সময় লাগবেঃ ১৫ মিনিট (ভাড়াঃ ২০ টাকা)।
  • মোটরবাইক/ব্যাটারি চালিত অটোতে যাওয়া যায় বন্দরটিলা ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার। এখানেই সকল থাকার কটেজ ও খাবার হোটেলের অবস্থান। সময় লাগবেঃ ২০ মিনিট (বাইকে ভাড়াঃ ২ জন ১০০ টাকা)।
  • নলচিরা ঘাট থেকে নোয়াখালীর চেয়ারম্যান ঘাট যাওয়ার ফিরতি সি-ট্রাক ছাড়ে সকাল ১০টায়। সি-ট্রাকের টিকেট ঘাটেই লাইন ধরে কাটতে হয়; টিকেট আগে কেটে আগে উঠতে পারলে ভিতরে বসার জায়গা পাবেন।
যোগাযোগঃ
  • হিমাচল (টিটি পাড়া কাউন্টার): ০১৮৪৮-৩০৮৯৯২-৩
  • একুশে এক্সপ্রেস (মানিক নগর কাউন্টার): ০১৭৩০-৮৯৭৪০০
  • লাল সবুজ (টিটি পাড়া কাউন্টার): ০১৮৪৪-৫৪৫৩৫১

রেল পথেঃ 

  • উপকূল ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর থেকে নোয়াখালীর সোনাপুর রেলওয়ে স্টেশন;
  • সিএনজিতে সোনাপুর থেকে চেয়ারম্যান ঘাট;
  • সি-ট্রাক/ট্রলার/স্পীড বোট চেয়ারম্যান ঘাট থেকে হাতিয়ার নলচিরা ঘাট;
  • মোটরবাইকে হাতিয়ার নলচিরা ঘাট থেকে হাতিয়ার মোক্তারিয়া ঘাট;
  • ট্রলারে মোক্তারিয়া ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাট;
  • মোটরবাইকে বন্দরটিলা ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার।
। উপকূল ট্রেনে ঢাকা থেকে নোয়াখালী হয়ে নিঝুম দ্বীপ ।
। উপকূল ট্রেনে ঢাকা থেকে নোয়াখালী হয়ে নিঝুম দ্বীপ ।
জেনে রাখা প্রয়োজনঃ
  • ঢাকার কমলাপুর থেকে,মঙ্গলবার ব্যতীত, প্রতিদিন বিকাল ৩ঃ২০ মিনিটে ৭১২ নং আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। নোয়াখালীর সোনাপুর পৌঁছে রাত ৯ঃ২০ মিনিটে (ভাড়াঃ ২২৫ থেকে ৬২১ টাকা)।
  • সিএনজিতে সোনাপুর থেকে চেয়ারম্যান ঘাট পৌছুতে সময় লাগবে দেড় ঘন্টা (ভাড়াঃ জন প্রতি ৯০ টাকা)।
  • চেয়ারম্যান ঘাট থেকে সারাদিনে কেবল ১টি সি-ট্রাক ছেড়ে যায় সকাল ৭-৮ টায় (জোয়ারের উপর নির্ভরশীল) নলচিরা ঘাটের উদ্দেশ্যে। তবে ট্রলার কিংবা স্পিড বোট চলাচল করে নিয়মিত,২ ঘন্টা অন্তর,বিকেল ৫ টা পর্যন্ত। সি-ট্রাকে সময় লাগবেঃ ২ ঘন্টা (ভাড়াঃ ৯০ টাকা), ট্রলারে সময় লাগবেঃ ২ ঘন্টা (ভাড়াঃ ১২০-১৫০টাকা), স্পিড বোটে সময় লাগবেঃ ২০ মিনিট (ভাড়াঃ ৪০০ টাকা)।
  • নলচিরা ঘাট থেকে রিজার্ভ মোটরবাইকে হাতিয়ার মোক্তারিয়া ঘাট। সময় লাগবেঃ ১ ঘন্টা (ভাড়াঃ ২ জন ৩৫০-৪০০ টাকা)।
  • মোক্তারিয়া ঘাট থেকে ৩০ মিনিট অন্তত ট্রলার যায় নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাটে। সময় লাগবেঃ ১৫ মিনিট (ভাড়াঃ ২০ টাকা)।
  • মোটরবাইক/ব্যাটারি চালিত অটোতে যাওয়া যায় বন্দরটিলা ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার। এখানেই সকল থাকার কটেজ ও খাবার হোটেলের অবস্থান। সময় লাগবেঃ ২০ মিনিট (বাইকে ভাড়াঃ ২ জন ১০০ টাকা)।
  • নলচিরা ঘাট থেকে নোয়াখালীর চেয়ারম্যান ঘাট যাওয়ার ফিরতি সি-ট্রাক ছাড়ে সকাল ১০টায়। সি-ট্রাকের টিকেট ঘাটেই লাইন ধরে কাটতে হয়; টিকেট আগে কেটে আগে উঠতে পারলে ভিতরে বসার জায়গা পাবেন।
  • নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে,বুধবার ব্যতীত, প্রতিদিন সকাল ৬ঃ০০ মিনিটে ৭১১ নং আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ঢাকার কমলাপুর পৌঁছে রাত ১১ঃ৫০ মিনিট (ভাড়াঃ ২২৫ থেকে ৬২১ টাকা)
। ঢাকা থেকে নোয়াখালী ট্রেনের ভাড়া ।
। ঢাকা থেকে নোয়াখালী ট্রেনের ভাড়া ।

‘বাংলাদেশ রেলওয়ে’ ওয়েবসাইট থেকে- ট্রেনের সময়সূচি দেখে নিতে পারেনঃ

https://railway.portal.gov.bd/site/page/7d41b060-030b-4bb9-bdb6-aa137c4c58da (নোয়াখালী থেকে ঢাকা)

https://railway.portal.gov.bd/site/page/fc0bb7cc-f267-45dc-be9c-7f63aa939009 (ঢাকা থেকে নোয়াখালী)

ভাড়াঃ ২২৫ থেকে ৬২১ টাকা

চট্টগ্রাম থেকেঃ

  • চট্টগ্রাম সদরঘাট থেকে লঞ্চে নলচিড়া ঘাট;
  • মোটরবাইকে হাতিয়ার নলচিরা ঘাট থেকে হাতিয়ার মোক্তারিয়া ঘাট;
  • ট্রলারে মোক্তারিয়া ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাট;
  • মোটরবাইকে বন্দরটিলা ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার।
। চট্টগ্রামের সদরঘাট থেকে লঞ্চে হাতিয়ার নলচিরা ঘাট । ছবিঃ সংগৃহীত ।
। চট্টগ্রামের সদরঘাট থেকে লঞ্চে হাতিয়ার নলচিরা ঘাট । ছবিঃ সংগৃহীত ।
জেনে রাখা প্রয়োজনঃ
  • শুক্রবার ও রবিবার ব্যতীত সকাল ৯ টায় ‘এম.ভি.বার আউলিয়া’, ‘এমভি আব্দুল মতিন’ এবং ‘এম.বি মনিরুল হক’ স্টীমার চট্টগ্রামের সদরঘাট থেকে ছেড়ে হাতিয়া নলচিরা ঘাটে পৌছায় বিকেল ৩ টায় (ভাড়াঃ ৩৫০-২২১৫ টাকা)।
  • নলচিরা ঘাট থেকে রিজার্ভ মোটরবাইকে হাতিয়ার মোক্তারিয়া ঘাট। সময় লাগবেঃ ১ ঘন্টা (ভাড়াঃ ২ জন ৩৫০-৪০০ টাকা)।
  • মোক্তারিয়া ঘাট থেকে ৩০ মিনিট অন্তত ট্রলার যায় নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাটে। সময় লাগবেঃ ১৫ মিনিট (ভাড়াঃ ২০ টাকা)।
  • মোটরবাইক/ব্যাটারি চালিত অটোতে যাওয়া যায় বন্দরটিলা ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার। এখানেই সকল থাকার কটেজ ও খাবার হোটেলের অবস্থান। সময় লাগবেঃ ২০ মিনিট (বাইকে ভাড়াঃ ২ জন ১০০ টাকা)।
ভাড়া :
  • প্রথম শ্রেনীঃ ২২১৫ টাকা
  • দ্বিতীয় শ্রেনীঃ ১১১০ টাকা
  • চেয়ার শ্রেণীঃ ৩৫০ টাকা
। ট্রলারে নিঝুম দ্বীপ থেকে চেয়ারম্যান ঘাটের উদ্দেশ্যে যাত্রা ।
। ট্রলারে নিঝুম দ্বীপ থেকে চেয়ারম্যান ঘাটের উদ্দেশ্যে যাত্রা ।

তবে সপ্তাহ জুড়ে,শুক্রবার ব্যতীত,১ দিন পরপর চেয়ারম্যান ঘাট থেকে তমরুদ্দীন ঘাট হয়ে নিঝুম দ্বীপ এবং নিঝুম দ্বীপ থেকে তমরুদ্দীন ঘাট হয়ে চেয়ারম্যান ঘাট ট্রলার আসা-যাওয়া করে।

  • চেয়ারম্যান ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপের উদ্দেশ্যে ট্রলার ছাড়ে রবিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সকাল ৬ঃ০০ মিনিটে।

  • নিঝুম দ্বীপ থেকে তমরুদ্দীন ঘাট হয়ে চেয়ারম্যান ঘাটের উদ্দেশ্যে ট্রলার ছাড়ে শনিবার, সোমবার ও বুধবার সকাল ৮ঃ০০ মিনিটে। সময় লাগবেঃ ৫ ঘন্টা।

যোগাযোগঃ ০১৭০৬-০৬৯৯৫২ (শাহারাজ মাঝি)

ভাড়াঃ ৩৫০ টাকা।

নিঝুম দ্বীপে থাকার হোটেল:

নিঝুম দ্বীপের নামার বাজারেই সকল কটেজ বা হোটেলের অবস্থান। প্রতি রাতের জন্যে জন প্রতি গুনতে হবে ১৫০ থেকে ৭০০ টাকা। সবথেকে আরামদায়ক ও দৃষ্টিনন্দন কটেজের নাম ‘নিঝুম দ্বীপ রিভার্স এন্ড রিসোর্ট’ বা ‘কেওড়া’। এছাড়া বাজারের পাশেই ‘হোটেল শাহীন’ এর পরিবেশ মাঝারি ধরনের। তবে সবথেকে সস্তায় থাকতে পারেন মসজিদ বোর্ডিং এ। যদিও আগে থেকে বুকিং দিয়ে এলে সোজা চলে যাওয়া যায় বুকিংকৃত কটেজে; কিন্তু এখানে এসে কটেজ ঠিক করলে তুলনামূলক সুলভ মূল্যে রুম ভাড়া পাওয়া যায়। বন বিভাগের কটেজ, মসজিদ বোর্ডিং, হোটেল শাহিন ও ‘নিঝুম দ্বীপ রিভার্স এন্ড রিসোর্ট’ বা ‘কেওড়া’ সহ বেশ কিছু হোটেল রয়েছে এই নামার বাজারে। কম খরচে থাকা যায় হোটেল শাহিনে; তবে এর একমাত্র অসুবিধে হলো এটি একদম মূল বাজারের পাশেই। জেলা পরিষদের ‘ঈশিতা ইকো রিসোর্টের’ সামনে হাঁটাচলা এবং বারবিকিউএর জন্যে ছোট সুন্দর মাঠ আছে।

। 'নিঝুম দ্বীপ রিভার্স এন্ড রিসোর্ট’ বা কেওড়া ।
। ‘নিঝুম দ্বীপ রিভার্স এন্ড রিসোর্ট’ বা কেওড়া ।
  • ‘নিঝুম দ্বীপ রিভার্স এন্ড রিসোর্ট’ বা কেওড়াঃ নামার বাজার থেকে ৩ মিনিটের হাঁটাপথের দূরত্বে আরামদায়ক ও দৃষ্টিনন্দন এই কটেজের অবস্থান। বাজারের কোলাহল থেকে দূরে, নিজস্ব জেনারেটর ও বাবুর্চীর ব্যবস্থা, বার-বি-কিউ ও তাঁবুতে অবস্থানের সুযোগ। রুম প্রতি ভাড়া গুণতে হবে প্রতি রাতের জন্যে ১০০০-১৫০০ টাকা।  (https://www.facebook.com/nijum7861/ )
  • শাহিন হোটেলঃ তুলনামূলক সস্তা এবং বড় ডাবল বেডের রুমে থাকা যাবে ৬ জন। মাথাপিছু ভাড়া পড়বে ১০০-১৫০ টাকা।  (https://www.facebook.com/nijhumDipHatiya/)
  • জেলা পরিষদ বাংলোঃ বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ বাংলোর সামনেই রয়েছে খোলা জায়গা। বার-বি-কিউ কিংবা বসে আড্ডা জুড়ে দিতে পারেন এখানেই।
  • মসজিদ বোর্ডিংঃ নিঝুম দ্বীপে সবথেকে সস্তায় থাকা যায় এখানে। পাশের স্থানীয় মসজিদ থেকে এটি পরিচালিত হয়।
। 'নিঝুম দ্বীপ রিভার্স এন্ড রিসোর্ট', 'জেলা পরিষদ বাংলো' এবং 'শাহিন হোটেল' ।
। ‘নিঝুম দ্বীপ রিভার্স এন্ড রিসোর্ট’, ‘জেলা পরিষদ বাংলো’ এবং ‘শাহিন হোটেল’ ।

এছাড়াও রয়েছে আরো বেশ কিছু থাকার হোটেল। বুকিং না দিয়ে এখানে এসে রুম ঠিক করলে তুলনামূলক সুলভ মূল্যে থাকা যায়

যোগাযোগঃ
  • ‘নিঝুম দ্বীপ রিভার্স এন্ড রিসোর্ট’ বা কেওড়াঃ ০১৬১২-৮৯২৫০৯
  • শাহীন হোটেলঃ ০১৭৩১-৮৮৮৫৩১
  • জেলা পরিষদ বাংলোঃ ০১৮১৪-৫৩৫৮৯১
  • মসজিদ বোর্ডিংঃ ০১৭২৭-৯৫৮৮৭৯

খাবার হোটেলঃ

নামার বাজারে সবগুলো হোটেলই প্রায় সম-মানের। কাঁকড়া ও ইলিশ খেতে পারেন হোটেল গুলোতে।

। 'হোটেল দ্বীপ সম্পদে' রাতের পপকর্ন পর্ব ।
। ‘হোটেল দ্বীপ সম্পদে’ রাতের পপকর্ন পর্ব ।
  • হোটেল দ্বীপ সম্পদঃ একজন অমায়িক ও বন্ধুসুলভ বয়স্ক দাদু এ খাবার হোটেলটি পরিচালনা করেন। খাবার অর্ডার আগে থেকে জানিয়ে রাখলে, উনি আপনার পছন্দের আইটেম রান্না করে রাখবেন। রাতে আমরা পপকর্ন ভেজেছিলাম উনার দোকানে।

নিঝুম দ্বীপের দর্শনীয় স্থানসমূহঃ 

। নিঝুম দ্বীপের দর্শনীয় স্থানসমূহ ।
। নিঝুম দ্বীপের দর্শনীয় স্থানসমূহ ।
  • নামার বাজার সৈকতঃ বারবিকিউ, তাঁবুতে রাত্রী যাপন, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে পারেন এ সৈকতে।
  • চৌধুরী খালঃ নৌকা নিয়ে চৌধুরী খাল ধরে খানিকটা এগিয়ে পাশের বনে সন্ধ্যার আগে হরিণ দেখার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। নিঝুম দ্বীপের নিস্তব্ধতা সবথেকে বেশি গ্রাস করবে আপনাকে এ বনেই।
  • চুয়াখালী বনঃ নামার বাজার প্রবেশের খানিকটা আগেই এ বনের বিস্তৃতি। এ বনে খুব ভোরে হরিণ দেখা যায়। ভোরবেলায় বাইক নিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন এ বন।
  • দমার চরঃ নিঝুম দ্বীপের পূর্বাংশে নতুন জেগে ওঠা এ দ্বীপের অবস্থান। অসংখ্য পাখ-পাখালিতে মুখরিত এ দ্বীপ।
  • কবিরাজের চরঃ চৌধুরী খালের বিপরীত পাশের চরের নাম কবিরাজের চর। এ দ্বীপে নেমে দেখতে দেখতে পারেন সূর্যাস্ত ও অগণিত বুনো মহিষের পাল।
  • ওয়াচ টাওয়ারঃ বন বিভাগের অফিসের পাশেই এ সুউচ্চ টাওয়ারের অবস্থান। এখান থেকে দেখতে পারেন সূর্যাস্ত, গ্রামের মানুষের জীবন সংগ্রাম ও সবুজ ঘন বনের প্রান্তর।

নিঝুম দ্বীপে নৌকায় বনে ঘুরতে যোগাযোগ করতে পারেনঃ ০১৭৮৬-০৬৯৩৮১ (নূর ইসলাম মাঝি)

নিঝুম দ্বীপে মোটরবাইকে ঘুরতে যোগাযোগ করতে পারেনঃ ০১৬৪০-৮৭০৮৯০ (বাবু)

“নিঝুম দ্বীপের সৈকতগুলো লোকারণ্যহীন কোলাহল মুক্ত এবং এখানে  অনুপস্থিত সমুদ্রের গর্জন”

‘নিঝুম দ্বীপ’ ভ্রমণ পরামর্শঃ

। নিঝুম দ্বীপে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ ।
। নিঝুম দ্বীপে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ ।
  • খাবার হোটেল গুলোতে কাঁকড়া খেতে পারেন।
  • নিঝুম দ্বীপে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। তবে সন্ধ্যার পর থাকার হোটেল গুলোতে কয়েক ঘন্টার জন্যে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
  • নামার বাজার সৈকতে তাঁবুতে ক্যাম্প করে থাকতে পারেন।
  • টেলিটক সহ সকল মুঠোফোন  নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত হলেও কেবল রবি ও এয়ারটেলের ৩ জি সুবিধা পাওয়া যায়।
  • শীতে এ দ্বীপে খেজুরের রস পাওয়া যায় স্বল্প মূল্যে।
  • চুয়াখালী বনের পুকুরটাতে হরিণের পাল পানি খেতে আসে সন্ধ্যায়। তাই হরিণ দেখতে চাইলে বিকেলেই পুকুর প্রাঙ্গনে চলে যাওয়া ভালো সিদ্ধান্ত।
  • একান্তই বনে হরিণের দেখা না পেলে বন বিভাগের অফিস চত্ত্বরে ২ টি হরিণ শাবক দেখে মনের খায়েশ মিটিয়ে ফেলতে পারেন।
  • একা বন ভ্রমণের থেকে স্থানীয় একজনকে গাইড হিসেবে সাথে রেখে বনে বিচরণ করা বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ বনের গহীনে নেই নেটওয়ার্ক, নেই পথ-নির্দেশনা।
  • নিঝুম দ্বীপ মূল ভূ- খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন, তাই যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বভাবতই দুর্বল। সেক্ষেত্রে ভ্রমণে মানসিক স্থিরতার উপর নির্ভর করাই শ্রেয়।
  • চেয়ারম্যান ঘাট বা নলচিড়া থেকে গমনকারী সি-ট্রাকগুলো জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করে যাত্রা করে এবং প্রতি ২ ঘন্টা অন্তর ট্রলার ছাড়ে। বিকাল ৫ টার পর ট্রলার চলাচল বন্ধ হয়ে যায়
  • দ্বীপের মানুষগুলো সরল প্রকৃতির। স্থানীয়দের সাথে ভালো ব্যবহার করবেন
  • প্লাস্টিক পণ্য পরিমিত ব্যবহার করবেন
। নিঝুম দ্বীপের সৈকতগুলো লোকারণ্যহীন কোলাহল মুক্ত এবং এখানে অনুপস্থিত সমুদ্রের গর্জন । ছবিঃ কনক পাল ।
। নিঝুম দ্বীপের সৈকতগুলো লোকারণ্যহীন কোলাহল মুক্ত এবং এখানে অনুপস্থিত সমুদ্রের গর্জন । ছবিঃ কনক পাল ।

গন্তব্য নিঝুম দ্বীপঃ নামার বাজার সৈকত (প্রথম পর্ব)

গন্তব্য নিঝুম দ্বীপঃ চৌধুরী খাল ও কবিরাজের চর (দ্বিতীয় পর্ব)

গন্তব্য নিঝুম দ্বীপঃ হরিণের সাথে সাক্ষাৎ ও মোহনার উত্তাল জলরাশি ডিঙ্গিয়ে বাড়ি ফেরা (শেষ পর্ব)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.